শনিবার ১১ অক্টোবর ২০২৫ - ২০:১৭
পাকিস্তান ইসলামী বিশ্বের ভবিষ্যৎ পরিবর্তনে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখতে পারে

ইরানের হাওজা ইলমিয়ার পরিচালক আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আরাফি ইসলামী বিশ্বের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের কৌশলগত অবস্থান উল্লেখ করে বলেন: পাকিস্তান একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী ও শিয়া কেন্দ্র, এবং যদি এই দেশ যুক্তিবাদী ও বিশুদ্ধ বিপ্লবী ইসলামের পথে অগ্রসর হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ইসলামী বিশ্বের রূপান্তরে এটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার ( ১১ অক্টোবর ২০২৫) আয়াতুল্লাহ আরাফি পাকিস্তানের সিনেট সদস্য ও মুসলিম ঐক্য পরিষদের (Majlis Wahdat-e-Muslimeen) প্রধান সেনেটর রাজা নাসির আব্বাস জাফরির সঙ্গে সাক্ষাতে তাঁর ঐক্যবদ্ধ ও বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন এবং দুই দেশের মধ্যে বৈজ্ঞানিক, একাডেমিক ও হাওজা পর্যায়ের সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে ইসলামী যুক্তি ও শক্তি নিয়ে প্রবেশের প্রয়োজন

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন: মুসলিম চিন্তাবিদদের বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে সক্রিয় উপস্থিতি থাকা জরুরি। আপনাদের উচিত ইসলামী ও বিপ্লবী যুক্তি নিয়ে একাডেমিক পরিসরে প্রবেশ করা। এই প্রবেশ হওয়া উচিত পরিকল্পিত, পরিমিত এবং এমন একটি সামগ্রিক রূপরেখা সহ যা কেবল মানবিক বিজ্ঞান নয়, অন্যান্য বিষয়েও চিন্তা ও মানবসম্পদ তৈরিতে সহায়ক হবে।

তিনি আরও বলেন: এ কাজের জন্য একটি কেন্দ্রীয় বুদ্ধিবৃত্তিক কাঠামো প্রয়োজন-যেখানে এমন আলেমরা থাকবেন যারা আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত এবং ধার্মিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা যারা যৌথভাবে এই পথকে এগিয়ে নিতে পারেন। আমার পরামর্শ হলো, জ্ঞানের সীমান্তে অবস্থিত প্রভাবশালী ও আন্তঃবিষয়ক (interdisciplinary) ক্ষেত্রে প্রবেশ করুন, একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরি করুন এবং বৈজ্ঞানিক ক্যাডার তৈরি করুন। এতে বড় রূপান্তর সম্ভব।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ইসলামী বিজ্ঞানের বৃহৎ প্রকল্প

তিনি বলেন: বর্তমানে হাওযায় আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও ইসলামী বিজ্ঞানের উপর কয়েকটি বৃহৎ প্রকল্প চালাচ্ছি, যেখানে প্রায় ৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয় ও হাওযার বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন। এসব প্রকল্প পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের জন্যও একটি আদর্শ হতে পারে।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আন্তঃবিষয়ক মেধাবী তৈরির প্রয়োজন

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন: আপনারা যদি জ্ঞানের সীমানায় অবস্থিত উৎকৃষ্ট ও আন্তঃবিষয়ক বিভাগগুলো থেকে ১০০ থেকে ১০০০ জন চিন্তাশীল মানুষ গড়ে তুলতে পারেন-চাই তারা শিয়া হোক বা সুন্নি-ইসলামী দৃষ্টিকোণের আওতায়, তবে সেটি হবে চিন্তা ও নেতৃত্ব তৈরির এক বিশাল উদ্যোগ। এর জন্য শক্তিশালী বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র প্রয়োজন। প্রয়োজনে কুম বা ইরান থেকে কয়েকজনকে বেছে নিয়ে বৌদ্ধিক নকশা ও ধারণা তৈরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

কুম হাওজার বৈজ্ঞানিক ও বৌদ্ধিক সম্পদ

তিনি আরও বলেন: কুমে বর্তমানে অর্থনীতি ও রাজনীতি বিষয়ে দুই থেকে তিন হাজার উৎকৃষ্ট রচনা রয়েছে, যা গত তিন দশকে দশ থেকে বিশ হাজার গবেষণার মধ্য থেকে নির্বাচিত হয়েছে। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনা, যা আপনারা কাজে লাগাতে পারেন।

নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে এই উপকরণগুলো দ্রুত প্রস্তুত করে আলেম ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে যুক্ত করা যেতে পারে, যাতে এটি গভীর বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলে।

হাওজার নমুনা বিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার

শেষে আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন: আমার পরামর্শ হলো, আমাদের কিছু আদর্শ হাওযা বিদ্যালয় ও কেন্দ্রের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপন করুন। আমাদের প্রায় ৭ থেকে ১০টি ভিত্তিমূলক ও অগ্রসর কেন্দ্র রয়েছে-যেমন জাহাঙ্গীরখান ও আমরোল্লাহি মাদ্রাসা-যেগুলো ঐতিহ্য বজায় রেখেও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ছাত্র তৈরি করছে। এই কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতা বিনিময় অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha